থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশঃ সম্পূর্ণ ভ্রমণ গাইড

বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য থাইল্যান্ড সবসময়ই এক দারুণ গন্তব্য। একে বলা হয় দক্ষিণ, পূর্ব এশিয়ার স্বর্গরাজ্য। এখানে রয়েছে সমুদ্রের অপূর্ব সৌন্দর্য, সবুজ পাহাড়, প্রাচীন মন্দির, আধুনিক শহর আর বিনোদনের অসংখ্য সুযোগ। ঢাকা থেকে সরাসরি মাত্র কয়েক ঘণ্টার ফ্লাইটেই পৌঁছে যাওয়া যায় ব্যাংককে, তাই ভ্রমণ অনেক সহজ। 
ভ্রমণ-কারীদের-জন্য-থাইল্যান্ড-সবসময়ই-এক-দারুণ-গন্তব্য
এজন্য অনেকেই প্রথম বিদেশ ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ বেছে নেন। স্বল্প খরচে, অল্প সময়ে আরামদায়ক ভ্রমণ উপভোগ করতে চাইলে থাইল্যান্ড সত্যিই একটি আদর্শ জায়গা। আমরা এই আর্টিকেলে জানব যে কিভাবে বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড ভ্রমণ করা যায়। 

সূচিপত্রঃ থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশঃ সম্পূর্ণ ভ্রমণ গাইড।

থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশঃ সম্পূর্ণ ভ্রমণ গাইড

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড ভ্রমণ এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে। ঢাকা থেকে প্রতিদিনই ব্যাংককের উদ্দেশ্যে সরাসরি ফ্লাইট ছাড়ে, যার ফলে খুব দ্রুত ভ্রমণ করা যায়। মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার ফ্লাইটেই ভিন্ন একটি দেশে প্রবেশ করা যায়, যেখানে রয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন সংস্কৃতি, প্রকৃতি আর আধুনিকতার ছোঁয়া। অন্য দেশে যেতে যেখানে অনেক ঘন্টা সময় লাগে, সেখানে থাইল্যান্ডে যাত্রা এতটাই স্বল্প সময়ে সম্ভব যে একে বলা হয়, সবচেয়ে কাছের বিদেশ ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

আরেকটি বড় কারণ হলো এর জনপ্রিয়তা। অনেকেই প্রথম বিদেশ ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ বেছে নেন, কারণ এখানে ভ্রমণের খরচ তুলনামূলকভাবে কম, ভিসা প্রক্রিয়া সহজ, আর সবকিছুই পর্যটক,বান্ধব। তাই থাইল্যান্ডকে বাংলাদেশের পর্যটকদের কাছে প্রথম পছন্দ বলা হয়।

থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজের ধরণ এবং এর ভিন্নতা।

থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ আসলে অনেক ধরণের হয় যাতে ভ্রমণকারীরা তাদের বাজেট আর পরিকল্পনা অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন। অল,ইনক্লুসিভ প্যাকেজ হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় ধরণ। এতে ফ্লাইট, হোটেল, খাবার, গাইড আর ভ্রমণের সব পরিকল্পনা আগে থেকেই অন্তর্ভুক্ত থাকে। ফলে ভ্রমণকারীদের আলাদা কোনো চিন্তা করতে হয় না, একেবারে নির্ভার হয়ে ভ্রমণ উপভোগ করা যায়।
সেমি,ইনক্লুসিভ প্যাকেজ তুলনামূলকভাবে বাজেটবান্ধব। এতে কিছু কিছু খরচ আলাদা বহন করতে হয়, যেমন কিছু খাবার বা ভ্রমণ ট্যুর বাদ থাকতে পারে। যারা বাজেট কমাতে চান তাদের জন্য এটি আদর্শ। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো কাস্টমাইজড প্যাকেজ। এখানে ভ্রমণকারী নিজেই পরিকল্পনা ঠিক করতে পারেন, কোথায় যাবেন, কতদিন থাকবেন, কোন হোটেলে থাকবেন। ফলে অভিজ্ঞতা একেবারে নিজের ইচ্ছেমতো সাজানো সম্ভব হয়।

থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য ও আকর্ষণীয় স্থানসমূহ।

(ব্যাংককঃ ঐতিহ্য আর আধুনিকতার শহর)
থাইল্যান্ড ভ্রমণ মানেই প্রথমেই আসে ব্যাংককের নাম। রাজধানী ব্যাংকক এমন একটি শহর যেখানে পুরোনো ইতিহাস, ধর্মীয় ঐতিহ্য আর আধুনিক শহুরে জীবন একসাথে মিশে আছে। দিনে তুমি মন্দির, প্রাসাদ ঘুরে দেখতে পারবে, আর রাতে পাবা ঝলমলে আলোয় সাজানো নাইট লাইফের ভিন্ন এক পরিবেশ। শহরটি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ও পর্যটন কেন্দ্র। এখানে ভ্রমণ করলে তুমি একদিকে ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির স্বাদ পাবে, অন্যদিকে আধুনিক নগর জীবনের আনন্দও উপভোগ করতে পারবে।
ভ্রমণ-কারীদের-জন্য-থাইল্যান্ড-সবসময়ই-এক-দারুণ-গন্তব্য
ব্যাংককের জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থানসমূহঃ
(গ্র্যান্ড প্যালেস) ব্যাংককের সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপনা হলো গ্র্যান্ড প্যালেস। এটি রাজপরিবারের পুরোনো প্রাসাদ, যেখানে থাইল্যান্ডের ইতিহাস, রাজকীয় সংস্কৃতি আর অসাধারণ স্থাপত্যশৈলী একসাথে দেখা যায়। সোনালি রঙের আলোকোজ্জ্বল ভবনগুলো পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
(ওয়াট ফো মন্দির) এই মন্দিরটি বিশাল আকারের শায়িত বুদ্ধ মূর্তির জন্য বিখ্যাত। যারা বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কে জানতে চান বা শান্ত পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে চান, তাদের জন্য এটি আদর্শ স্থান।
ওয়াট অরুন (টেম্পল অব ডন) চাও ফ্রায়া নদীর ধারে অবস্থিত এই মন্দিরকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তে সবচেয়ে সুন্দর লাগে। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মন্দিরের আলো ঝলমলে দৃশ্য দেখলে সত্যিই মন ভরে যায়।
(সিয়াম প্যারাগন ও এমবিকে সেন্টার) ব্যাংককের বড় বড় শপিং মলগুলোর মধ্যে সিয়াম প্যারাগন আর এমবিকে সেন্টার সবচেয়ে বিখ্যাত। এখানে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় ডিজাইন সবই পাওয়া যায়। পরিবার বা বন্ধুদের জন্য কেনাকাটা করতে চাইলে এই মলগুলো একদম পারফেক্ট।
(চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট ও নাইট মার্কেট) যদি তুমি সস্তায় কেনাকাটা করতে চাও, তবে চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট মিস করা যাবে না। এখানে কাপড়চোপড়, হস্তশিল্প, গিফট আইটেম থেকে শুরু করে নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়। এছাড়া নাইট মার্কেটে ঘুরলে স্ট্রিট ফুড আর রাতের জমজমাট পরিবেশ উপভোগ করতে পারবে।

পাট্টায়া সমুদ্র আর বিনোদনের শহরঃ
পাট্টায়া থাইল্যান্ডের অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকত শহর। রাজধানী ব্যাংকক থেকে মাত্র ২ থেকে ৩ ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই শহর প্রতিদিন হাজার হাজার ভ্রমণকারীদের আকর্ষণ করে। যারা সমুদ্রের নীল জল, বালুময় সৈকত আর বিনোদন ভালোবাসেন, তাদের জন্য পাট্টায়া নিঃসন্দেহে এক অসাধারণ ভ্রমণ গন্তব্য।
(পাট্টায়া বিচ) পাট্টায়া ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হলো এর সৈকত। এখানে তুমি সাঁতার কাটতে পারবে, বালিতে খেলা করতে পারবে কিংবা স্রেফ বসে বসে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে। যারা জলক্রীড়া পছন্দ করে তাদের জন্য জেট স্কি, প্যারাসেইলিংসহ নানা রকম মজার ব্যবস্থা রয়েছে।
কোরাল আইল্যান্ড (কোহ লার্ন) পাট্টায়া থেকে ছোট নৌকায় করে সহজেই পৌঁছানো যায় কোরাল আইল্যান্ডে। দ্বীপটি নীল স্বচ্ছ সমুদ্র আর প্রবাল প্রাচীরের জন্য বিখ্যাত। এখানে স্কুবা ডাইভিং আর স্নরকেলিং করে সমুদ্রের ভেতরের দুনিয়া কাছ থেকে দেখা যায়। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি স্বর্গের মতো। 
(ওয়াকিং স্ট্রিট) যারা রাতের জীবন উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য ওয়াকিং স্ট্রিট হলো পাট্টায়ার সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা। রাত নামলেই এই রাস্তা আলো, সঙ্গীত আর বিনোদনে মুখরিত হয়ে ওঠে। এখানে পাবেন বার, ক্লাব, রেস্টুরেন্ট আর নানা ধরনের লাইভ শো।
(নং নুচ ট্রপিক্যাল গার্ডেন) পাট্টায়ার আরেকটি আকর্ষণ হলো নং নুচ গার্ডেন। এটি একটি সুন্দর ফুলের বাগান, যেখানে নানা ধরনের ফুল, গাছ আর সবুজ পরিবেশ ভ্রমণকারীদের মুগ্ধ করে। শুধু তাই নয়, এখানে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক নাচ, হাতির শোসহ ভিন্নধর্মী বিনোদনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

ফুকেট ও ক্রাবি, দ্বীপ ভ্রমণের সেরা জায়গাঃ
থাইল্যান্ড ভ্রমণে যারা সমুদ্র আর দ্বীপ পছন্দ করেন, তাদের জন্য ফুকেট আর ক্রাবি হলো স্বপ্নের গন্তব্য। এখানকার নীলাভ সমুদ্র, সাদা বালির সৈকত আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণকারীদের মন কেড়ে নেয়। এখানে শুধু সৈকতই নয়, আছে দ্বীপে ঘোরাঘুরি, জলক্রীড়া আর নানা ধরনের অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ।
(পাতং বিচ) ফুকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকত হলো পাতং বিচ। এখানে দিনে সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়, আর রাতে জমে ওঠে নাইট লাইফ। যারা সাঁতার, জেট স্কি বা সৈকতের ভিড় উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য এটি একদম পারফেক্ট।
(ফি ফি আইল্যান্ডস) ফি ফি দ্বীপগুলো ফুকেট থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ডে-ট্রিপ। সাদা বালির সৈকত আর স্বচ্ছ নীল পানির জন্য এগুলো বিশ্ববিখ্যাত। এখানে বোট রাইড, স্নরকেলিং, স্কুবা ডাইভিং করে সমুদ্রের নিচের দুনিয়াও ঘুরে দেখা যায়। সিনেমা প্রেমীদের কাছে এটি আরও বিশেষ, কারণ এখানে বেশ কয়েকটি হলিউড সিনেমার শুটিং হয়েছে।
(জেমস বন্ড আইল্যান্ড) ১৯৭৪ সালের জেমস বন্ড মুভির জন্য দ্বীপটি বিখ্যাত হয়েছে, তবে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অসাধারণ। উঁচু চুনাপাথরের পাহাড় আর নীল সমুদ্র মিলিয়ে দ্বীপটির দৃশ্য যেন পোস্টকার্ডের মতো।

চিয়াং মাই। পাহাড় আর সংস্কৃতির শহরঃ 
উত্তর থাইল্যান্ডের জনপ্রিয় শহর চিয়াং মাই অনেকটা আলাদা। ব্যাংকক বা পাট্টায়ার মতো এখানে ভিড় জমজমাট নাইট লাইফ নেই। বরং আছে শান্ত পরিবেশ, পাহাড়ি দৃশ্য, পুরোনো মন্দির আর স্থানীয় সংস্কৃতির রঙ। এজন্য চিয়াং মাই-কে বলা হয়, প্রকৃতি আর ঐতিহ্যের মিলনস্থল। শহরের চারপাশে পাহাড় ঘেরা, আর ভেতরে আছে ঐতিহাসিক স্থাপনা। ভ্রমণকারীরা এখানে একই সঙ্গে প্রকৃতি, ইতিহাস, ধর্মীয় স্থান আর অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পান। যারা শান্তিপূর্ণ ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের কাছে চিয়াং মাই এক স্বপ্নের জায়গা।

চিয়াং মাই,এর ঘোরার প্রধান জায়গাঃ
(ওয়াট ফ্রা দোই সুতেপ) চিয়াং মাইয়ের সবচেয়ে বিখ্যাত মন্দির হলো ওয়াট ফ্রা দোই সুতেপ। এটি পাহাড়ের ওপরে অবস্থিত, আর সেখান থেকে পুরো শহরটা চোখের সামনে ধরা দেয়। মন্দিরের স্বর্ণালী স্তূপ আর পরিবেশ একেবারেই অনন্য। ভ্রমণকারীরা সাধারণত সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের সময় এখানে গেলে দারুণ অভিজ্ঞতা পান।
(চিয়াং মাই নাইট বাজার) যারা কেনাকাটা আর খাবার পছন্দ করেন, তাদের জন্য নাইট বাজার এক স্বর্গ। এখানে স্থানীয় হস্তশিল্প, জামাকাপড়, স্যুভেনির, আর নানা ধরনের স্ট্রিট ফুড পাওয়া যায়। স্থানীয় সংস্কৃতির স্বাদ নেওয়ার জন্য এই বাজারে একবার ঘুরতেই হবে।
(হাতি ক্যাম্প ও জঙ্গল ট্রেকিং) চিয়াং মাইতে অনেক হাতি সংরক্ষণ ক্যাম্প আছে, যেখানে ভ্রমণকারীরা হাতিদের কাছ থেকে দেখার ও যত্ন নেওয়ার অভিজ্ঞতা পান। এছাড়া আশেপাশে পাহাড়ি জঙ্গলে ট্রেকিংয়ের সুযোগও আছে। প্রকৃতি আর বন্যপ্রাণী যারা ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
(পাহাড়ি গ্রাম ভ্রমণ) চিয়াং মাই ঘুরে যদি আশেপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে যান, তাহলে সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা কাছ থেকে দেখা যায়। তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক, সংস্কৃতি আর আতিথেয়তা ভ্রমণকে আরও সমৃদ্ধ করে তোলে।

থাইল্যান্ড ভ্রমণের খরচ এবং সঠিক বাজেট পরিকল্পনা।

থাইল্যান্ড ভ্রমণের খরচ আসলে আপনার বেছে নেওয়া প্যাকেজ ও সুবিধার ওপর নির্ভর করে।
একটি সাধারণ ৩ দিন ২ রাতের প্যাকেজ ব্যাংকক, পাট্টায়া ভ্রমণের জন্য শুরু হয় প্রায় ১৮,০০০ টাকা থেকে।

৫ দিন ৪ রাতের প্যাকেজ নিলে খরচ পড়তে পারে ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ টাকা। যদি বিলাসবহুল হোটেল, বিশেষ দ্বীপ ভ্রমণ বা অতিরিক্ত ট্যুর যোগ করা হয়, তাহলে বাজেট ৪০,০০০ টাকা বা তার বেশি হতে পারে।  

তবে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, গ্রুপ ট্যুর বুক করলে খরচ অনেকটাই কমে যায়। এজন্য অনেকেই বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ নিতে পছন্দ করেন।

থাইল্যান্ড ভিসা প্রক্রিয়া: যা যা জানা দরকার।

বাংলাদেশি নাগরিকদের থাইল্যান্ড ভ্রমণের জন্য ভিসা নেওয়া বাধ্যতামূলক। ভিসা প্রক্রিয়া তুলনামূলক সহজ হলেও কিছু কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হয়। যেমন,পাসপোর্ট ৬ মাসের মেয়াদসহ, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, হোটেল বুকিং কনফার্মেশন এবং রিটার্ন টিকিট। ভিসা ফি সাধারণত ৪,০০০ থেকে ৬,০০০ টাকার মধ্যে হয়। 
সম্প্রতি Thailand Digital Arrival Card TDAC চালু হয়েছে, যা ভ্রমণকে আরও আধুনিক ও ঝামেলাহীন করেছে। বেশিরভাগ ট্রাভেল এজেন্সি ভিসার ব্যাপারে সহায়তা করে, তাই প্যাকেজ বুক করলে আলাদাভাবে চিন্তা করতে হয় না। 

থাইল্যান্ড ভ্রমণের সেরা সময় ও আবহাওয়ার তথ্য।

ভ্রমণ অভিজ্ঞতা সুন্দর করার জন্য সঠিক সময় নির্বাচন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। থাইল্যান্ড ভ্রমণের সেরা সময় হলো নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। এ সময় আবহাওয়া আরামদায়ক ও ঠাণ্ডা থাকে, ঘুরে বেড়ানোর জন্য উপযুক্ত। 
ভ্রমণ-কারীদের-জন্য-থাইল্যান্ড-সবসময়ই-এক-দারুণ-গন্তব্য
জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বর্ষা থাকে, এ সময় সমুদ্র ভ্রমণ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই বেশিরভাগ বাংলাদেশি ভ্রমণকারী শীতকালেই থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ বুক করে থাকেন। 

থাইল্যান্ডের খাবার সংস্কৃতি ও কেনাকাটার অভিজ্ঞতা।

থাইল্যান্ড ভ্রমণে গেলে খাবারের বৈচিত্র্য না চেখে দেখা সত্যিই অসম্পূর্ণ। রাস্তার খাবার এখানে খুব জনপ্রিয়। টম ইয়াম স্যুপ, প্যাড থাই, ম্যাংগো স্টিকি রাইস, গ্রিলড চিকেন, সবই ভ্রমণকারীদের কাছে দারুণ লাগে। তবে স্বাস্থ্যসম্মত দোকান থেকে খাবার খাওয়াই ভালো। 

কেনাকাটার ক্ষেত্রেও থাইল্যান্ড স্বর্গরাজ্য। ব্যাংককের এমবিকে মল, টার্মিনাল ২১, চাতুচাক উইকেন্ড মার্কেট, আর পাট্টায়ার নাইট মার্কেট পর্যটকদের কাছে বিশেষ জনপ্রিয়। পোশাক, ইলেকট্রনিক্স, স্যুভেনির, সবকিছুই এখানে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায়।

থাইল্যান্ডের স্থানীয় পরিবহন ব্যবস্থা এবং ভ্রমণ সুবিধা।

থাইল্যান্ডে ভেতরে ঘোরার জন্য পরিবহন ব্যবস্থা খুব সহজ ও সুবিধাজনক। ব্যাংককে আছে মেট্রো ট্রেন, বাস আর বিখ্যাত টুকটুক। টুকটুক ভ্রমণ ছোট দূরত্বের জন্য খুবই আনন্দদায়ক।

পাট্টায়া ও ফুকেটের মতো শহরে মোটরবাইক ভাড়া করা যায়, যা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। এক শহর থেকে আরেক শহরে যাওয়ার জন্য বাস, ট্রেন বা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও সহজলভ্য।

অনেক থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ এ স্থানীয় পরিবহন খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকে, ফলে ভ্রমণকারীদের আলাদাভাবে ভাবতে হয় না।

নিরাপদ ভ্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ টিপস ও পরামর্শ।

থাইল্যান্ড ভ্রমণের সময় কিছু সাধারণ নিয়ম মানলে অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর হবে। সবসময় পাসপোর্ট, টিকিট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিজের কাছে রাখতে হবে। মন্দির ভ্রমণের সময় শালীন পোশাক পরা জরুরি, কারণ এটি তাদের সংস্কৃতির অংশ। রাস্তার খাবার খাওয়ার সময় পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। টাকা, পয়সা ও মূল্যবান জিনিসপত্র সুরক্ষিত রাখতে হবে।
স্থানীয় সিম কিনে নিলে যোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবহার সহজ হবে। এসব টিপস মানলে থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ ভ্রমণ হবে আরও নিরাপদ, আরামদায়ক এবং আনন্দময়।

শেষ কথাঃ থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশঃ  সম্পূর্ণ ভ্রমণ গাইড।

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড ভ্রমণ এখন খুব সহজ এবং স্বপ্ন নয়। সাশ্রয়ী খরচ, সহজ ভিসা প্রক্রিয়া এবং মজাদার অভিজ্ঞতার কারণে প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি এখানে ভ্রমণে যান। সুন্দর সৈকত, আধুনিক শহর, ঐতিহ্যবাহী মন্দির এবং সুস্বাদু খাবারের জন্য থাইল্যান্ড সত্যিই একটি অসাধারণ গন্তব্য। তাই নিজের সময় এবং বাজেট অনুযায়ী একটি থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশ বুক করে নাও এবং উপভোগ করো জীবনের এক স্মরণীয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা। 

এই আর্টিকেলে থাইল্যান্ড ট্যুর প্যাকেজ ফ্রম বাংলাদেশঃ সম্পূর্ণ ভ্রমণ গাইড, পড়ে যদি আপনাদের ভালোলাগে তাহলে অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন এবং আমার এই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বারী বিডি আইটি র নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url